দি আর্ট অফ্ লিভিং ফাউন্ডেশনের বিস্তার সারা পৃথিবীজোড়া এবং স্বেচ্ছাসেবীরাও সর্বত্র ছড়িয়ে আছে৷ তাই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে কোনো বিপর্যয়ে দি আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশনের সাহায্যের হাত ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পৌছে যায়৷ স্বেচ্ছাসেবকরা বিপদগ্রস্ত মানুষদের শরীর ও মনকে সুস্থ করে তোলে ও তাদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করে৷ এই ভাবে সারা পৃথিবী জুড়ে বিপর্যয়গ্রস্ত মানুষদের পাশে দাড়িয়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে দি আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশন এক বিশেষ স্থান অধিকার করে নিয়েছে৷
দি আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশন ও তার সহযোগী সংস্থা, ইন্টারন্যাশন্যাল অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান ভ্যালুজ (আই এ এইচ ভি) ও ব্যক্তি বিকাশ কেন্দ্র, ইন্ডিয়া (ভি ভি কে আই), সম্মিলিতভাবে সন্ত্রাস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার মানুষেরপুনর্বাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে৷
সুনামি আক্রান্ত অঞ্চলে ও গুজরাটের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলিতে এই সব স্বেচ্ছাসেবীরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তাদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেবার কাজে ও তাদের পুনর্বাসনের জন্য নিরলস অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিল৷ তাদের পাশে আপনজনের মতো দাঁড়িয়ে তাদের বিষাদগ্রস্ত, আতঙ্কগ্রস্ত মনকে সুস্থ করে তুলে, তাদের মনে নিরাপত্তাহীনতা দূর করে প্রয়োজনীয় সবরকম ত্রাণসামগ্রী তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিল৷
তাৎক্ষণিক সাহায্য এবং সেবা
কোনো ভয়ানক বিপর্যয় ঘটে যাবার সঙ্গে সঙ্গে যে আপৎকালীন ত্রাণ সামগ্রী ও সেবার প্রয়োজন হয়, আর্ট অফ্ লিভিং সংস্থা তা দিয়ে থাকে ৷ তার মধ্যে খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ এবং আশ্রয়ও থাকে ৷ ডাক্তার, মনস্তত্ত্ববিদ ও অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যবিশারদেরা এই আপৎকালীন সাহায্যে সর্বদা সঙ্গে থাকেন ও বিপর্যয় ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সেবার কাজে ঝাপিয়ে পড়েন৷
আতঙ্ক থেকে উদ্ধার
ভয়ঙ্কর বিপর্যয় থেকে যারা জীবন ফিরে পায় তারা যেহেতু ভয়ঙ্কর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যায় তাই বিপর্যয় কেটে যাবার পরও তাদের আতঙ্ক কাটেনা- তারা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ তাই শুধু ত্রাণসামগ্রী দিয়ে সাহায্য করাই তাদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়৷ মন থেকে আতঙ্ক দূর করে জীবনকে গ্রহণ করবার মত মানসিকতা, বিশ্বাস তাদের মধ্যে সঞ্চার করা একান্ত জরুরী হয়ে পড়ে৷ এর জন্য আর্ট অফ লিভিং -এর ট্রমা রিলিফ প্রোগ্রাম আছে৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সুনামির পর যারা বেঁচেছিল তাদের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প খুবই কার্যকরী হয়েছিল; মাত্র চারদিনে বহু সংখ্যক আতঙ্কগ্রস্ত মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা মানুষ আবার তাদের বিশ্বাস, আস্থা ফিরে পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছিল৷
দীর্ঘ মেয়াদী পুনর্বাসন
প্রকৃত ত্রাণকার্য তখনই সম্পন্ন হয় যখন বিপর্যয়ের পর জীবিত মানুষেরা পুরোপুরিভাবে পুনর্বাসিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, যখন তারা শরীরে, মনে, ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে পুনর্বাসিত হয়। তাদের জীবন চালানোর জন্য রোজগারের প্রয়োজন হয়৷ এই দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের জন্য আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে স্থানীয় মানুষের জন্যে গৃহনির্মাণ, শৌচালয় , রাস্তাঘাট, স্কুল ইত্যাদি পুননির্মাণের ব্যবস্থা করে ও সেখানকার মানুষদের কারিগরী বিদ্যার শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করে ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গঠনে সাহায্য করে৷
বন্যাপীড়িত পাকিস্তানে ত্রাণ কার্য-
২০১০ সালের জুলাই মাসে প্রবল বর্ষণ পাকিস্তানকে বন্যায় ভাসিয়ে দেয়৷ সেই সময় বন্যাপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সব রকমের সাহায্য করেছিল পাকিস্তানের দি আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা।